সরকার অবশ্যই জনগণের কথা শুনতে এবং তাদের ন্যায্য দাবি মানতে বাধ্য
প্রকাশিত : ২৫ মে ২০২৫, ১১:৫৬:৩২
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। সরকার অবশ্যই জনগণের কথা শুনতে এবং তাদের ন্যায্য দাবি মানতে বাধ্য। এখানে সরকারের মান-অভিমান কিংবা রাগ-বিরাগের কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে নাগরিকদের সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা জারি রাখতে হবে। প্রত্যেক নাগরিককে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোচ্চার থাকতে হবে। দেশের জনগণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের করুণার পাত্র নয়।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের সাক্ষাতের একদিন পরই রোববার (২৫ মে) বিকালে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধানের সঙ্গে দেখা করে রাজনৈতিক দলগুলো আবারও জাতীয় নির্বাচনের তারিখ তথা সুস্পষ্ট দিনক্ষণ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। বিএনপির দাবি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমরা সর্বাত্মক সমর্থন অব্যাহত রেখেছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধানের নেতৃত্বে জনগণ অবিলম্বে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ একটি জাতীয় নির্বাচন দেখতে পাবে বলে আমি প্রত্যাশা রাখছি।
এদিন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপি সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি’র ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তারেক রহমান।
তারেক রহমান বলেন, হঠাৎ করেই এনবিআর সংস্কার অর্থনীতির জন্য ভালো নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিয়মমাফিক বাজেট ঘোষণা করতে হবে। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, প্রতিবছর জাতীয় বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঘাটতি বাজেট হচ্ছে মূল প্রতিবন্ধকতা। বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে এনবিআরের হয়তো সরাসরি কোনো ভূমিকা নেই। তবে রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এনবিআরের ভূমিকা মূখ্য।
‘এমন বাস্তবতায় বাজেট পাসের ঠিক আগ মুহূর্তে অন্তর্বর্তী সরকার হঠাৎ করেই এনবিআরের ওপর সংস্কার চাপিয়ে দিয়ে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে যে একটি অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে এটি আমাদের অর্থনীতির জন্য খুব ভালো বিষয় নয়। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সরকার সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে গণতন্ত্রকামী জনগণ বিশ্বাস করে।’
সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা জারি রাখার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত থাকলে সরকারের পক্ষে ফ্যাসিবাদী চরিত্র ধারণ করা সহজ হয় না। সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সরকার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সরকারের চরিত্র যা-ই হোক, সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য করা না গেলে ক্ষমতাসীন সরকার হয়তো নিজেদের অজান্তেই স্বৈরাচারী হয়ে ওঠে।
এসপিপি সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মাহদী আমিন, বিএলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, ভাসানী জনশক্তির শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার একাংশের খন্দকার লুৎফুর রহমান, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী ও সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এইচএস