সত্য চাপা দেওয়া যায় — সাময়িকভাবে। কিন্তু সত্য নীরব থাকেনা — সে ফিরে আসে, ফিরে এসে উত্তর দাবি করে!
প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৬:২৬
বাংলাদেশ পুলিশের ১৯৮৪ ব্যাচের একজন দক্ষ, সুস্থির, এবং নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা ছিলেন খায়রুল বাশার। পেশাগত জীবনে তাঁর সততা ও নিয়মানুবর্তিতা বারবার প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু একদিন—এক অজানা বিকেল, তিনি নিজেই জীবন থেকে সরে দাঁড়ালেন। লক্ষ্মীপুর জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায়, নিজের বাসায় তিনি আত্মহত্যা করেন।
তারিখটা এখন ক্যালেন্ডারে হারিয়ে গেছে, কিন্তু তার মৃত্যু প্রশ্ন রেখেছে একটি প্রতিষ্ঠানের শিরায়-শিরায়।
কেন?
কেন একজন অভিজ্ঞ, প্রশংসিত পুলিশ কর্মকর্তা এমন এক পথ বেছে নিলেন?
সেই উত্তর আজও অজানা।
অথবা, বলা ভালো—আড়ালে রাখা।
তাঁর আত্মহত্যা নিয়ে নানা গুঞ্জন আজও ছড়িয়ে আছে, যেগুলোর কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে সাবেক আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর নাম।
তাঁর বিরুদ্ধে কোনো সরাসরি অভিযোগ হয়তো প্রমাণ হয়নি, কিন্তু বারবার আলোচনায় এসেছে একটি বিষয়:
ব্যক্তিগত সম্পর্কের সীমা কতদূর পেশাদার দায়বদ্ধতাকে স্পর্শ করতে পারে?
তৎকালীন সময়ে খায়রুল বাশারের পারিবারিক জীবনে নানান বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। বলা হয়ে থাকে, সে বিতর্কের ছায়া পৌঁছেছিলো পুলিশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও। আরও বলা হয়ে থাকে—খায়রুল বাশারের স্ত্রীকে ঘিরে কিছু সংবেদনশীল পরিস্থিতির জন্ম হয়েছিলো যা একপর্যায়ে তাঁকে মানসিকভাবে চাপে ফেলে।
কিন্তু এই কথাগুলো যদি নিছক গুজব হয়—তবে তদন্ত থেমে যায় কেন?
একজন মানুষের আত্মহত্যা যদি শুধু ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হত, তাহলে রাষ্ট্রীয় তদন্ত কেন নিরুত্তর থাকে?
একজন সাবেক পুলিশপ্রধান হিসেবে, এমন মৃত্যুর দায় আপনি কি সত্যিই অস্বীকার করতে পারেন?
এই প্রশ্নটি এখন আর শুধু খায়রুল বাশারের পরিবারের না।
এটি আজ পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি তরুণ কর্মকর্তার প্রশ্ন,
এটি একটি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ জবাবদিহির প্রশ্ন,
এটি আমাদের জাতীয় বিবেকের প্রশ্ন।
সত্য চাপা দেওয়া যায় — সাময়িকভাবে।
কিন্তু সত্য নীরব থাকেনা — সে ফিরে আসে, ফিরে এসে উত্তর দাবি করে।